মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন ভিসায় গেলে বেতন কত, কষ্ট কেমন ২০২৫

বাঙালি শ্রমিকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য স্থান বা কর্মস্থল হল মালয়েশিয়া। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে যে সকল দেশে মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় তার মধ্যে মালয়েশিয়া প্রথম সারির একটি দেশ। অন্যান্য দেশের তুলনায় মোটামুটি কম টাকায় এ দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমিক যেতে পারে এবং আয়ের দিক দিয়েও এশিয়ার এ দেশটি বাংলাদেশীদের জন্য ভালো গন্তব্য। তবে গত কয়েক বছর যাবত মালয়েশিয়ার ভিসা কিছু অসাধু এজেন্সির কারণে বেশ চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে।

কন্সট্রাকশন কাজে বেতনঃ

যে সকল প্রবাসী ভাইয়েরা মালয়েশিয়া যায় তার বেশিরভাগ মানুষই কনস্ট্রাকশন কাজের সাথে যুক্ত থাকে। মালয়েশিয়ার নীতি অনুযায়ী কনস্ট্রাকশন কাজে কোন শ্রমিকের ন্যূনতম বেসিক বেতন বর্তমানে ১৫০০ রিংগিত যা বাংলাদেশী টাকায় ৪০৩৫২. ৪ টাকা। মালয়েশিয়ার মুদ্রার নাম রিঙ্গিত এবং বর্তমানে আজকের রেট অনুযায়ী ১ রিঙ্গিত= 26.9016 টাকা। তবে এই রেট পরিবর্তনশীল।

তবে বেসিক বেতনই শেষ কথা নয়। বেসিক ডিউটির পাশাপাশি বেশিরভাগ কোম্পানিগুলোতেই ওভারটাইম কাজ করার সুযোগ থাকে। তখন আপনার কাজের দক্ষতা ও মেধা অনুযায়ী আপনি বেশ ভালো অর্থ ইনকাম করতে পারবেন।  আপনার কোম্পানি ভালো হলে এবং আপনার পর্যাপ্ত যোগ্যতা থাকলে মাস শেষে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

 মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী 2025 সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সকল শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন ধরা হবে ১৭০০ রিঙ্গিত। এটি দেশি ও বিদেশী উভয় শ্রমিকদের জন্যই প্রযোজ্য হবে।

source: https://www.business-humanrights.org/

কত ঘন্টা ডিউটি করতে হয়ঃ

সাধারণত কোম্পানির বেসিক ডিউটি থাকে আট ঘন্টা। তবে কনস্ট্রাকশন সাইটে কাজ বেশিরভাগ সময়ই বেশি থাকে। তাই বেসিক ডিউটির পর অতিরিক্ত কর্ম ঘন্টা কাজ করার সুযোগ থাকে এবং বেশিরভাগ শ্রমিকই ওভারটাইম কাজ করে। সে ক্ষেত্রে গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ডিউটি করতে হয়।

কনস্ট্রাকশন কাজে কষ্ট কেমনঃ

অন্যান্য সেক্টরে তুলনায় যে কোন দেশে কনস্ট্রাকশন কাজে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। মালয়েশিয়াতেও কনস্ট্রাকশন কাজে অন্যান্য কাজের তুলনায় পরিশ্রম বেশ ভালোই। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বেশিরভাগ সময়েই রোদে কাজ করতে হয়। তবে মালয়েশিয়ার তাপমাত্রা বাংলাদেশ থেকে খুব একটা ব্যতিক্রম নয়, প্রায় একই ধরনেরই তাপমাত্রা। তাই খুব দ্রুতই তাপমাত্রার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়া যায়। একটানা কাজ করতে হয় বিধায় কনস্ট্রাকশন কাজ বেশ কঠিন বলে মনে হয়। তবে বাংলাদেশেও যাদের কন্সট্রাকশনের কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের জন্য মানিয়ে নেওয়া খুবই সহজ।

মালয়েশিয়ায় কাজের সুবিধাঃ

মালয়েশিয়া কাজ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু আকর্ষণীয় দিক রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ভালো দিকটি হল যখন আপনি দেশে ছুটিতে আসবেন বেশিরভাগ কোম্পানি যাওয়া আসার বিমানের টিকিটের খরচ বহন করে। হেলথ ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থা করে থাকে। অনেক কোম্পানি আপনার থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে এবং এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দেবে। তবে বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা শুধুমাত্র থাকা খরচ বহন করে কিন্তু খাওয়া খরচ বহন করে না। সে ক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব অর্থায়নে খাওয়ার খরচ বহন করতে হবে।

পরিশেষে মালয়েশিয়ায় আপনি যে কোম্পানিতে যাচ্ছেন সেই কোম্পানি সম্পর্কে যারা মালয়েশিয়ায় আপনার পরিচিতের মধ্যে বর্তমানে অবস্থান করছে তাদের কাছ থেকে ভালো করে খোঁজ নিন এবং কোম্পানির সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন। তাহলে কখনোই কোন দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে আপনার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

Leave a Comment