দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৫

পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নকারী চারটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া,জাপান, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ান। অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে সহ বিনোদন সকল ক্ষেত্রেই এই চারটি দেশ উন্নয়নের সকল মাত্রা দিন দিন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই চারটি দেশকে একত্রে বলা হয় “দ্য এশিয়ান টাইগার।”  দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মোট জিডিপির পাঁচ শতাংশ শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দ করে থাকে। আর এরই মধ্যে থেকে আন্তর্জাতিক স্টুডেন্টগুলোকে দেশটি বৃত্তি দিয়ে বিনা খরচে শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে। এসব বৃত্তির মধ্যে  GKS অন্যতম।

GKS কিঃ GKS এর পূর্ণরূপ GLOBAL KOREA SCHOLARSHIP । GKS হল কোরিয়ার সরকারি বৃত্তির একটি প্রক্রিয়া। GKS প্রোগ্রামের মধ্যে অনার্স, মাস্টার্স , পিএইচডি,রিসার্চ এবং ডক্টরালের মত ক্ষেত্র গুলোতে আবেদন করা যায়। এর সাথে কোরিয়ান ভাষা শিক্ষার একটি এক বছরের কোর্স থাকে।

আবেদন করার যোগ্যতা

আন্ডারগ্রাজুয়েটে আবেদনের সময় বয়স  ২৫ এর নিচে হতে হবে এবং গ্রাজুয়েট লেভেলে আবেদন করার জন্য বয়স ৪০ এর নিচে হতে হবে। যে ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে চান তার পূর্ববর্তী ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। ধরা যাক, আপনি যদি অনার্স এর জন্য আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই এইচএসসির সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে। আবেদনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য রেজাল্টও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেই মানদণ্ডে পড়াশোনা করে থাকেন না কেন আপনার রেজাল্ট ৮০ পারসেন্ট এর উপরে থাকতে হবে। বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।

GKS-এর সুবিধা

GKS-এর আওতায় কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে গেলে নিম্নোক্ত সুবিধা গুলো পাওয়া যায় (কোরিয়ান টাকায়):

বাংলাদেশ থেকে করিয়া যাওয়ার এবং কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে পুনরায় ফেরত আসার প্লেন টিকিট দেওয়া হয়। টিউশন ফি এর প্রয়োজন হবে না। মেডিকেল এলাউন্স থাকবে প্রতি মাসে ২০ হাজার কোরিয়ান উন। ভাষা শিক্ষার জন্য ৮ লক্ষ কোরিয়ান উন। কোরিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ এর টপিকে যদি পাঁচ বা পাঁচের উপরে পান তাহলে অতিরিক্ত এক লক্ষ উন বেশি পাবেন। রিসার্চ সাপোর্ট হিসেবে পাবেন এক লক্ষ দশ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার উন পর্যন্ত। প্রথমবার করিয়া পৌছানোর পরেই সেটেলমেন্ট এলাউন্স হিসেবে কোরিয়ান টাকায় ২ লাখ উওন পাবেন। আন্ডার গ্রাজুয়েট অথবা গ্রাজুয়েট এর উপর ভিত্তি করে প্রতিমাসে শুরুতে নয় থেকে দশ লাখ কোরিয়ান উন পাবেন। আপনার ডিগ্রী কমপ্লিট করার জন্য সব শেষে আরো এক লাখ উন পাবেন।

কয় ভাবে আবেদন করা যায়ঃ

দুইভাবে জিকেএস এর জন্য এপ্লাই করা যায়। প্রথমটি হলো এম্বাসি ট্র্যাক এবং দ্বিতীয় টি হল ইউনিভার্সিটি ট্র্যাক। অ্যাম্বাসি ট্রাকের মাধ্যমে তিনটি ইউনিভার্সিটির তিনটি প্রোগ্রামে আবেদন করা যায়। অপরদিকে যদি ইউনিভার্সিটি ট্র্যাক থেকে আবেদন করা হয় তাহলে একটি ইউনিভার্সিটির শুধুমাত্র একটি প্রোগ্রামেই আবেদন করা যায়।

যদিও এম্বাসি ট্র্যাক থেকে আবেদন করলে বেশি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করা যায় তারপরেও ইউনিভার্সিটি ট্র্যাক থেকে প্রতিবছর স্টুডেন্ট বেশি নেয়া হয়।

কখন আবেদন করতে হয়ঃ

আন্ডার গ্রাজুয়েশনের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাসে এবং পিএইচডি, রিসার্চ, মাস্টার্স, ডক্টরালের মতো প্রোগ্রামগুলোতে সেপ্টেম্বর মাসে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আবেদন করতে কি কি লাগে: 

ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডি কার্ড, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সিভি, একাডেমিক সার্টিফিকেট, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, রেকমেন্ডেশন লেটার ইত্যাদি।

স্টুডেন্ট ভিসায় কোরিয়ায় মাসিক  ইনকাম কতঃ 

দক্ষিণ কোরিয়ায় অসংখ্য কাজের সুযোগ রয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বৃত্তি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া গেলেও কাজ করার সুযোগ পায়। মাসে কি পরিমাণ ইনকাম করা যাবে তা নির্ভর করে মূলত ভাষা দক্ষতা ও কর্মদক্ষতার ওপর। তবে এক্ষেত্রে ভাগ্য কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ। স্টুডেন্ট হিসেবে সাউথ কোরিয়ায় মোটামুটি ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়। তবে ভাগ্য ভালো থাকলে কেউ কেউ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন।

Leave a Comment