বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের অন্যতম সেরা পছন্দের দেশ হলো ওমান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো ওমানেও বাংলাদেশের অসংখ্য কর্মী রয়েছে। ২০২২ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিভিন্ন দেশের ভিসা নীতি পাল্টেছে এবং এ পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলে ২০২৩ সালে ওমানের ভিসা পুনরায় চালু করা হলেও পরে আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেহেতু সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয় তাই অনেকেই জানতে চান ২০২৫ সালে ওমানের ভিসা নীতি কেমন হবে অর্থাৎ বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দেয়া হবে কিনা।
বর্তমান ভিসা ব্যবস্থার অবস্থা
২০২৩ সালে ওমান সরকার কিছু ভিসা নীতিতে পরিবর্তন এনে দেশটিকে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য আরও উন্মুক্ত করেছে। ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবেশের পথ কিছুটা সহজ করেছে। আর এ পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে এর মধ্যেও ভিসা সম্পর্কিত একাধিক নীতি ও পদক্ষেপ আছে যেগুলো ২০২৫ সালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
ওমানের ভিসা কবে খুলবে ২০২৫
বর্তমানে ওমানের ভিসা বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ওমান সরকারের সাথে ভিসা খোলার ব্যাপারে আলোচনা করলেও ওমানের ভিসা খোলা হয়নি এবং ভিসা কবে খোলা হবে সে সম্পর্কেও স্পষ্ট ভাবে কোন দিন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু ধারণা করা যায় 2025 সালে ওমানের ভিসা খোলার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
২০২৫ সালের জন্য ভিসার প্রত্যাশা
২০২৫ সালের জন্য ভিসার অবস্থা নির্ভর করবে তিনটি মূল বিষয়ের উপর:
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি: পৃথিবীজুড়ে চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভিসা নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন: বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা, জ্বালানি সঙ্কট এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিবর্তন।
ওমানের অর্থনীতিঃ ওমানের অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা এবং কর্মসংস্থান নীতির উপরও ভিসা নীতি নির্ভরশীল। দেশের অর্থনীতি যদি ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে যায় তবে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ হতে পারে।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংহতি: বিগত বছরগুলোতে বিদেশি শ্রমিকদের সাথে স্থানীয় নাগরিকদের বিভিন্ন সময় কলহের তৈরি হয়েছে। স্থানীয় নাগরিক ও বিদেশি কর্মীদের মধ্যে সামাজিক সংহতি নিশ্চিত করতে হলে সরকারের কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে বড় কোন সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
ওমানের ভিসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও থাকবে। সম্প্রতি অভিবাসনের জন্য যে ধরনের শর্তযুক্ত নীতিমালা দেখা যাচ্ছে তা অনুসরণ করে চলতে হবে। এছাড়াও কাজের অনুমতি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলো বিদেশি শ্রমিকদের জন্য অনেক সময় ব্যয়বহুল এবং জটিল হয়ে উঠতে পারে। এ সকল সমস্যার সমাধান করতে হবে।
প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ ও কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা। ওমান সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে সে অনুযায়ী নিজেদের কর্মসূচী সাজানো। বিদেশে কাজ করার আগ্রহী শ্রমিকদের জন্যও তথ্যসংগ্রহ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করা অপরিহার্য।
উপসংহার
ওমানের ভিসা ব্যবস্থা ২০২৫ সালে কেমন থাকবে তা নির্ভর করবে বহির্বিশ্বের পরিস্থিতি ও স্থানীয় অর্থনীতির অবস্থা কেমন থাকবে তার ওপর। সাধারণভাবে বলা যায় অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আসলে চাকরির সুযোগও বাড়বে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী বছরগুলোতে ওমানে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সব সময় প্রস্তুত থাকা এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অতএব, সকলেই সচেতন থাকুন এবং প্রস্তুতি নিন যাতে সুযোগ আসলে তা কাজে লাগাতে পারেন।
মানুষ আরও জানতে চায়-
ওমানের ভিসা কিভাবে আবেদন করতে হয়?
ওমানের ভিসা প্রাপ্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা সম্ভব। আবেদনকারীদের প্রথমে ওমানের নির্ধারিত অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়। ফর্ম পূরণের পর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং ফি জমা দিতে হবে।
ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন?
ভিসা আবেদন করার সময় আবেদনকারীর একটি বৈধ পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ভিসার ফি, মেডিকেল টেস্টের সার্টিফিকেট এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হবে।