ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি অন্যতম সদস্য দেশ হল লিথুনিয়া। ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে লিথিওনিয়া সেনজেনভুক্ত দেশ গুলোর মধ্যে একটি হয়ে যায়। সেনজেনভুক্ত মোট ২৭ টি দেশ রয়েছে যার মধ্যে লিথুনিয়া একটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার পর লিথুনিয়ার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে উন্নতি করা শুরু করেছে। আর সেই সুবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্মীরা দিন দিন লিথুনিয়া মুখী হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকেও এর সংখ্যা কোন অংশে কম নয়। তবে লিথুনিয়ায় মানুষ শুধু ওয়ার্ক পারমিট ভিসাই নয় বরং ভ্রমণ ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং ফ্যামিলি ভিসা সহ আরো অন্যান্য ভিসায় গিয়ে থাকে।
লিথুনিয়ায় কাজের ভিসা এবং কাজের ভিসার প্রকারভেদঃ
লিথুনিয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে প্রচুর কাজ রয়েছে। যার ফলে অভিজ্ঞ কর্মীদের চাহিদা লিথুনিয়ায় আকাশচুম্বী। তবে অভিজ্ঞতা ছাড়াও লিথুনিয়ায় বিভিন্ন কাজ করা যায়। শ্রমিকের ধরন অনুযায়ী লিথুনিয়া বিভিন্ন রকম ভিসা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, সাধারণ কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, দক্ষ কর্মীদের জন্য EU Blue Card ভিসা এবং ইন্ট্রা কোম্পানি ট্রান্সফার ভিসা। এ সকল ভিসায় সাধারণত বাংলাদেশ থেকে মানুষ লিথুনিয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে যায়।
EU Blue Card পেতে একজন শ্রমিককে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন হতে হবে। এটিই শ্রমিকদের জন্য সবচেয়ে সুবিধা জনক ভিসা। কারণ এই বিষয়ে লিথুনিয়া যেতে পারলে দুই বছর অস্থায়ীভাবে লিথুনিয়ায় অবস্থান করার সুযোগ পাবেন এবং যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারবেন।
যদি সিজনাল ভিসায় লিথুনিয়া যান সে ক্ষেত্রে এক বছর সেখানে থাকতে পারবেন এবং কাজ করতে পারবেন। তবে লিথুনিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে অবশ্যই NATIONAL D VISA-র জন্য আবেদন করতে হবে। আর যদি লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যান তাহলে সেখানে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে কাজ করতে পারবেন।
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি লাগেঃ
ইউরোপী ইউনিয়নের সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি হল লিথুনিয়া। লিথুনিয়ায় যেতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এগুলো হলোঃ
- ন্যূনতম ছয় মেয়াদী একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- নিয়োগকর্তার আমন্ত্রণ পত্র
- কাজের দক্ষতার প্রমাণ ইত্যাদি
এসব বৈধ কাগজপত্র থাকলে আপনি লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদনকরতে পারবেন। এছাড়াও সর্বদা সঠিক তথ্যের জন্য এবং সবচেয়ে ভালো দিকনির্দেশনার জন্য সব সময় পার্শ্ববর্তী লিথুনিয়ান এম্বাসির সাথে যোগাযোগ রাখুন।
লিথুনিয়ার কাজের ভিসার দাম কতঃ
কাজের ভিসার দাম নির্ভর করে বিভিন্ন আপেক্ষিক বিষয়ের উপর। তাই একদম সঠিকভাবে কাজের ভিসার দাম বলা সম্ভব নয়। তবে লিথুনিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বা কাজের ভিসায় যেতে আনুমানিক ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো লাগে। যদি সরকারি ভাবে যাওয়া যায় তাহলে খরচ আরো কম লাগবে।
লিথুনিয়ায় সর্বনিম্ন বেতন কতঃ
আপনার কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আপনার বেতন নির্ধারিত হবে। আবার কোম্পানি ভেদেও বেতনের তারতম্য ঘটে। সাধারণত প্রায় বেশিরভাগ কোম্পানিগুলোতেই কাজ করতে হয় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা তবে অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে ওভারটাইম মিলিয়ে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টাও কাজ করতে হতে পারে। একজন নতুন শ্রমিক যদি প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ডিউটি করে সে ক্ষেত্রে তার বেতন হবে আনুমানিক ৫০০ থেকে ৬০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো তবে যদি ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা ডিউটি করা যায় সে ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। অর্থ উপার্জন করা কিছু কিছু সময় নির্ভর করে শ্রমিকের দক্ষতার উপর। যদি কোন কাজে কেউ অভিজ্ঞ হয়ে থাকে তাহলে তার বেতনও বেশি হয়ে থাকে।
মানুষ আরও জানতে চায়-FAQ’S
লিথুনিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?
হ্যাঁ, লিথুনিয়া সেনজেনভুক্ত দেশ।
লিথুনিয়ার মুদ্রার নাম কি?
লিথুনিয়ার মুদ্রার নাম-ইউরো।