দেশি মুরগির জন্য বিভিন্ন ভ্যাকসিন রয়েছে। যেমনঃ রাণীক্ষেত, গামবোরো এবং ফাউল পক্স। যদি দেশি মুরগির এ সকল রোগ দেখা দেয় এবং যথাসময়ে ভ্যাকসিন ও টিকা নিশ্চিত করা যায় তাহলে রোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। নিচে দেশি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টিকা দেওয়ার নিয়ম উল্লেখ করা হলো:
দেশি মুরগির বিভিন্ন রোগ ও ভ্যাকসিনের তালিকাঃ
বিসিআরডিভি (BCRDV)
রোগের নাম: রাণীক্ষেত
ভ্যাকসিন প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- মুরগির ৭ দিন বয়সে: ১০০ ফোটা পরিশোধিত পানিতে মিশিয়ে ২ চোখে ১ ফোঁটা করে দিতে হবে।
- মুরগির ২১ দিন বয়সে: আগের মত একইভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
কার্যকারিতাঃ
গবেষণায় দেখা গেছে যে BCRDV এর কার্যকারিতা Bangla-BCRDV এর তুলনায় বেশি। বিশেষ করে ফাওমি মুরগির ক্ষেত্রে। এটি মুরগির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় করে এবং রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করে।
গামবোরো (Gumboro)
রোগ: গামবোরো
ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়মঃ
- বয়স: ১০-১২ দিন এবং ১৮-২২ দিন।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: মুখে এক ফোঁটা করে অথবা খাবার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
কার্যকারিতা
গামবোরো ভ্যাকসিন মুরগির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রামক বুরসাল রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে। সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন দিতে পারলে এটি ৫-৭ দিনের মধ্যে কার্যকরী হয়।
ফাউল পক্স (Fowl Pox)
সাধারণ ডোজ
- রঙ: খয়েরী বা ইটের রং।
- মিশ্রণ পদ্ধতি: ৩ মিলি পরিশোধিত পানিতে মেশাতে হবে।
- প্রয়োগের সময়: ৩০ দিনে ডানার চামড়ায় খুঁচিয়ে দিতে হয়।
ফাউল পক্স (বুষ্টার ডোজ)
- রঙ: খয়েরী বা ইটের রং।
- মিশ্রণ পদ্ধতি: ৩ মিলি পরিশোধিত পানিতে মেশাতে হবে।
- প্রয়োগের সময়: ৩০ দিনে ডানার চামড়ায় খুঁচিয়ে দিতে হবে।
ফাউল পক্স (Fowl Pox) একটি ভাইরাল রোগ যা মুরগির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণত ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। রোগের লক্ষণগুলো হলো ত্বকে ফুসকুড়ি, ক্ষত এবং শ্বাসকষ্ট।
টিকা দেওয়ার নিয়ম
প্রথম টিকা: মুরগির বাচ্চার জন্মের ৭ দিনের মধ্যে বিসিআরডিভি টিকা দিতে হবে।
দ্বিতীয় টিকা: ২১ দিন বয়সে পুনরায় বিসিআরডিভি টিকা দিতে হবে।
গামবোরো টিকা: ১০-১২ দিন বয়সে এবং ১৮-২২ দিন বয়সে দিতে হবে।
ফাউল পক্স টিকা: ৩০ দিন বয়সে প্রয়োগ করতে হবে।
ফাউল কলেরা টিকা: ৭০ দিন বয়সে দিতে হবে।
সতর্কতা
টিকা দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে টিকা প্রয়োগ করা উচিত। প্রয়োগের জন্য বিশুদ্ধ পানি বা ডিস্টিল ওয়াটার ব্যবহার করতে হবে। স্থানীয় ভেটেরিনারিয়ানদের পরামর্শ নিতে হবে। এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে দেশি মুরগির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং রোগের প্রাদুর্ভাব কম দেখা দেবে।