সংস্কৃতির দিকে দক্ষিণ কোরিয়া খুবই মনোযোগী। দক্ষিণ কোরিয়ানরা সংস্কৃতিকে আগলে রেখেই তাদের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করে। সংস্কৃতির উপর তারা বেশ শ্রদ্ধাশীল। দক্ষিণ কোরিয়া হল প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিক প্রভাবের একটি প্রাণবন্ত মিশ্রণ। আর এই দুইটি জিনিস একত্রে ধারণ করেই তারা সাফল্যের চরম সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে এবং ইতিহাসকে অধিকতার গৌরবান্বিত করছে।
তাদের ইতিহাসের লম্বা লিস্ট থাকলেও উল্লেখযোগ্য কিছু ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
দক্ষিণ কোরিয়া যে সকল ইতিহাস সারা বিশ্বের মনে ছাপ রেখে যায় তা হল তাদের পারিবারিক এবং সামাজিক মূল্যবোধ, রন্ধন প্রণালী, ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা, ভাষা ও সাহিত্য, আধুনিক প্রভাব, ফ্যাশন ও ডিজাইন, উৎসব ও ছুটির দিন, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনসহ আরো অনেক কিছু। নিচে এগুলো সম্পর্কে কিছুটা বর্ণনা করা হলো।
সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধঃ
দক্ষিণ কোরিওরা বড়দের প্রচুর সম্মান করে এবং ছোটদের খুবই স্নেহ করে। বড়দের সম্মান করা তাদের রীতিরই অংশ। সমাজের মানুষের প্রতিও তারা খুবই দায়িত্বশীল আচরণ করে। দক্ষিণ কোরিয়া শান্তিপ্রিয় জাতি। পরিবারের সাথে তাদের বন্ধন খুবই দৃঢ় এবং প্রবীনদের প্রতি তারা খুবই শ্রদ্ধাশীল।
রন্ধন প্রণালীঃ
দক্ষিণ কোরিয়ান খাবার বেশ বৈচিত্রময় এবং স্বাদেও বিচিত্র। তাদের প্রধান খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে কিমচি, বিবিমবাপ, বুলগোগি। এছাড়াও গাজনযুক্ত খাবার কোরিয়ান রান্নায় স্বাস্থ্য ও ঐতিহ্যের গুরুত্বকে অনেকাংশেই প্রতিফলিত করে।
ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলাঃ
কোরিয়ান শিল্পকলা এখন বিশ্ব নন্দিত। কোরিয়ান সঙ্গীত গুগক, পানসোরী এবং কোট মিউজিক কোরিয়ায় বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যবাহী নৃত্য বুচাইচুম জিওমু বিভিন্ন উৎসব উদযাপনের সময় পরিবেশন করা হয়।
ভিজ্যুয়াল আর্টসঃ
বিভিন্ন মৃৎশিল্প, কারুশিল্প ও এমব্রয়ডারির মতো কাজগুলো তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের ইতিহাস কে স্মরণ করায়। এগুলো তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক।
কে-পপঃ
আধুনিক বিশ্বে করিয়ান মিউজিক ব্যান্ড বিটিএস এবং ব্লাক পিঙ্ককে চেনে না এমন মানুষ মেলা ভার। দুনিয়া জুড়ে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কোরিয়ান আধুনিক সংস্কৃতি বহন করে। কোরিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং মানুষের কাছে আরো বেশি কোরিয়ার সংস্কৃতি পৌঁছে দিচ্ছে।
সিনেমাঃ
করিয়ান ড্রামা এবং সিনেমা এখন সারা বিশ্বের মানুষ দেখে। সিনেমা ক্ষেত্রে তো কোরিয়ার বিস্ময়কর সাফল্য। করিয়ান সিনেমা “প্যারাসাইট” সমালোচকদেরও প্রশংসা পেয়েছে। কোরিয়ার আরও একটি জনপ্রিয় সিনেমা হল “ট্রেন টু বুসান”।
উৎসব ও ছুটিঃ
দক্ষিণ কোরিয়ার সামাজিকভাবে পালিত একটি উৎসবের নাম হলো “চুসেওক”। এটি হল ফসল কাটার উৎসব। এ সময় পরিবারের সব মানুষ একত্রিত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের আহার করে থাকে। এছাড়া আরও একটি উৎসবের নাম হলো “সিওল্লাল”।
ভাষা ও সাহিত্যঃ
কোরিয়ান বর্ণের নাম হাঙ্গুল। আর হাঙ্গুলে লেখা কোরিয়ান ভাষা জাতীয় উৎস। শিন কিউং-সুকের মতো লেখক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের সাথে সমসাময়িক সাহিত্য সমৃদ্ধ করেছে।
ফ্যাশন এবং ডিজাইনঃ
বিশেষ অনুষ্ঠানে কোরিয়ানরা হ্যানবোক নামের বিশেষ ধরনের পোশাক পরিধান করে যা তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে বর্তমানে আধুনিকতার মিশ্রণে প্রতিফলিত করে।
প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনঃ
এশিয়ায় প্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া একটি। স্যামসাং ও এলজির মত বিশ্ব বাজার দাপিয়ে বেড়ানো প্রযুক্তি কোম্পানি দক্ষিণ কোরিয়ার। গবেষণা থেকে শুরু করে প্রযুক্তির প্রায় সকল খাতে কুরিয়ার গৌরবজ্জ্বল ভূমিকা বিদ্যমান।